মাথা ব্যথা ও বমি অনেক কারণে হতে পারে। এইখানে মাথা ব্যাথা ও বমি কোন রোগের লক্ষণ , মাথা ব্যাথা বমি ভাব কমানোর উপায় , মেয়েদের মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ , মাথা ভারী লাগার কারণ ,মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ ,মাথা ব্যাথা বমি বমি ভাব এর ঔষধ , মাথা ব্যাথা কোন রোগের লক্ষণ, মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ , গ্যাস থেকে মাথা ব্যাথা ইত্যাদি নিয়ে আলোচনা করা হবে ।
মাথা ব্যাথা ও বমি কোন রোগের লক্ষণ
মাথা ব্যথা ও বমি অনেক রোগের লক্ষণ হতে পারে। এর মধ্যে কয়েকটি সাধারণ কারণ হল:
মাইগ্রেন: মাইগ্রেন হল একটি দীর্ঘস্থায়ী মস্তিষ্কের ব্যাধি যা তীব্র মাথাব্যথার উৎপত্তি করে। মাইগ্রেনের সাথে প্রায়ই বমি, বমি বমি ভাব, আলোর প্রতি সংবেদনশীলতা এবং শব্দের প্রতি সংবেদনশীলতা দেখা দিতে পারে।
টেনশন : অতিরিক্ত টেনশন থেকে মাথা ব্যথা ও বমি বা প্রায়ই বমি বমি ভাব হতে পারে।
সাইনাস ইনফেকশন: সাইনাস ইনফেকশন হল নাকের পাশের গহ্বরগুলির সংক্রমণ। সাইনাস ইনফেকশন হলে প্রায়ই মাথাব্যথা, বমি বা বমি বমি ভাব, নাক থেকে শ্লেষ্মা নিঃসরণ এবং নাক বন্ধ হয়ে যাওয়ার সমস্যা দেখা দিতে পারে।
বিভিন্ন ধরণের সংক্রমণ রোগঃ যেমন ডেঙ্গু, ম্যালেরিয়া, টাইফয়েড ইত্যাদির সাথেও মাথাব্যথা এবং বমি হতে পারে।
আরও জানুনঃ ঘাড় ব্যথা থেকে মুক্তির উপায়
অন্যান্য রোগ :
মাথাব্যথা এবং বমি অন্যান্য স্বাস্থ্য সমস্যার লক্ষণ হতে পারে, যেমন:
- টিউমার
- মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ
- স্ট্রোক
- মেনিনজাইটিস
- ইন্ট্রাক্রেনিয়াল হাইপারটেনশন
- রক্তচাপের সমস্যা
- হৃদরোগ
- ডায়াবেটিস
- থাইরয়েড সমস্যা
অন্যান্য কারণঃ
খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যাঃ খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যা থেকে মাথা ব্যথা এবং বমি হতে পারে ।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়াঃ কিছু কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়ায় মাথা ব্যথা এবং বমি হতে পারে ।
মাথা ব্যথা এবং বমির সাথে যদি অন্যান্য লক্ষণ যেমন জ্বর, ঝাপসা দৃষ্টি, খিঁচুনি, অজ্ঞান হওয়া ইত্যাদি দেখা দেয়, তাহলে তা গুরুতর অবস্থার লক্ষণ হতে পারে। এক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসার প্রয়োজন।
মাথা ব্যথা এবং বমির কারণ নির্ণয়ের জন্য একজন চিকিৎসকের সাথে পরামর্শ করা উচিত। চিকিৎসক রোগীর লক্ষণ, চিকিৎসা ইতিহাস এবং শারীরিক পরীক্ষার ভিত্তিতে সঠিক কারণ নির্ণয় করে চিকিৎসার পরামর্শ দেবেন।
মাথা ব্যাথা বমি ভাব কমানোর উপায় কি?
আপনার মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব বিভিন্ন কারণে এর নির্ভর করে,আপনি নিম্ললিখিত উপায় মেনে চলতে পারেন যা আপনার মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব উপশম করতে পারে।
ওষুধ
আপনার যদি মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাব হয়, তাহলে ওষুধগুলি উপশম পেতে সহায়তা করতে পারে। কিছু সাধারণ ওষুধের মধ্যে রয়েছে:
- অ্যাসিটামিনোফেন (টিলিনোল, টাইলেনোল)
- ইবুপ্রোফেন (অ্যাডভিল, মোট্রিন)
- ন্যাপ্রোক্সেন (অ্যালভা, ন্যাপ্রোক্সেন)
- অ্যাসপিরিন (অ্যাসপিরিন)
- ড্রোগার (ডরোনেথিন)
- মেটোক্লোপ্রামাইড (রেচেরেল, অ্যান্টেমেট)
- অ্যান্টিহিস্টামাইনস (ডিফেনহিড্রামিন, ডাইমেনহাইড্রিনাইট)
আপনার জন্য কোন ওষুধটি সঠিক তা নির্ভর করে আপনার মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের কারণ এবং তীব্রতার উপর। আপনার ডাক্তার আপনার জন্য সঠিক ওষুধটি নির্ধারণ করতে সাহায্য করতে পারেন।
মাথা ব্যাথা দূর করার ব্যায়াম
অন্যান্য প্রতিকার
ওষুধ ছাড়াও, আপনি এখানে কিছু অন্যান্য প্রতিকার চেষ্টা করতে পারেন যা মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের উপশম করতে সহায়তা করতে পারে:
- ঠান্ডা স্যাঁক
- দৈনিক ৬-৮ ঘণ্টা ঘুমান
- পানি এবং অন্যান্য তরল পান করুন
- শব্দ বা অতিরিক্ত আলো এড়িয়ে চলুন
আপনার মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের কারণ নির্ণয় এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পেতে আপনার ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা উচিৎ ।
মাথা ব্যাথা ও বমি রোগের ঘরোয়া চিকিৎসা
মাইগ্রেন, ভ্রমণ অসুস্থতা, এবং খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণে মাথাব্যথা ও বমি হলে, ঘরোয়া চিকিৎসা উপশম পেতে সহায়তা করতে পারে।
মাইগ্রেন
মাইগ্রেনের কারণে মাথাব্যথা ও বমি হলে, নিম্নলিখিত ঘরোয়া চিকিৎসাগুলি করতে পারেন:
- ঠান্ডা স্যাঁক
- পর্যাপ্ত ঘুম
- পানি এবং অন্যান্য তরল পান করুন
- অতিরিক্ত আলো বা শব্দ এড়িয়ে চলুন
- কিছুক্ষণ পর পর হাল্কা খাবার খান
ভ্রমণ অসুস্থতা
ভ্রমণ অসুস্থতার কারণে মাথাব্যথা ও বমি হলে, নিম্নলিখিত ঘরোয়া চিকিৎসাগুলি চেষ্টা করতে পারেন:
- গাড়ি বা জাহাজে চলাকালীন সামনের দিকে তাকান
- বমি প্রতিরোধক ওষুধ খান
খাদ্য বিষক্রিয়া
খাদ্য বিষক্রিয়ার কারণে মাথাব্যথা ও বমি হলে, নিম্নলিখিত ঘরোয়া চিকিৎসাগুলি চেষ্টা করতে পারেন:
- পর্যাপ্ত তরল পান করুন
- কিছুক্ষণ পর পর হাল্কা খাবার খান
- বিশ্রাম নিন
- অতিরিক্ত আলো বা শব্দ এড়িয়ে চলুন
আপনার মাথাব্যথা ও বমি যদি গুরুতর হয় বা দীর্ঘস্থায়ী হয়, তাহলে একজন ডাক্তারের সাথে পরামর্শ করা গুরুত্বপূর্ণ। ডাক্তার আপনার মাথাব্যথা ও বমি হওয়ার কারণ নির্ণয় করতে এবং উপযুক্ত চিকিৎসা পেতে সাহায্য করতে ছিকিতস
গ্যাস থেকে মাথা ব্যাথা
যাদের হজমের সমস্যা আছে বা খাবার ঠিকমতো হজম হয়না, এসব থেকে পেটে গ্যাস তৈরি হতে থাকে। পেটে গ্যাস থেকেই মাথার যন্ত্রণা শুরু হতে পারে। মানুষের শরীরে কার্বন ডাই-অক্সাইডের পরিমাণ বেড়ে গেলে তা থেকে মাথাব্যথার সমস্যা শুরু হয়। বেশিরভাগ ক্ষেত্রে দেখা যায় যে, কার্বোহাইড্রেট এবং চিনি ঠিকভাবে হজম হতে চায়না। তসাতা থেকে পেটে গ্যাস তৈরি হয় ও এর থেকে মাথার যন্ত্রণার উৎপত্তি হয়। একাধিক গবেষণায় দেখা গিয়েছে যে, যাঁরা ঘন হজম সংক্রান্ত সমস্যায় ভোগে, তারা মাথা ব্যথার সমস্যায় বেশি ভুগে।
গ্যাসের সমস্যা থেকে পেট ব্যথা, কোষ্ঠকাঠিন্য, বমি বমি ভাব এবং বমি ইত্যাদি সমস্যার সৃষ্টি হতে পারে। এছাড়াও বদহজমের কারণে ঠিকভাবে ঘুম হতে চায় না । এর থেকে বিষণ্ণতা, উদ্বেগের লক্ষণগুলো সৃষ্টি হয় । এগুলোও মাথার ব্যথার সমস্যা বাড়িয়ে তোলে।
মেয়েদের মাথা ঘোরা ও বমি বমি ভাব কিসের লক্ষণ
মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব লক্ষণ দুটি যা প্রায়ই একই সময়ে ঘটে। মেয়েদের মাথা ঘোরা এবং বমি বমি ভাব অনুভব করা হতে পারে অসুস্থতা, গর্ভাবস্থা এবং আরও অনেক সম্ভাব্য কারণে।
আপনার উপসর্গগুলির অন্তর্নিহিত কারণ চিহ্নিত করে আপনার স্বাস্থ্যসেবা প্রদানকারী আপনার জন্য সঠিক রোগ নির্ণয় ও চিকিৎসা পেতে সহায়তা করবে।
মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথা হওয়ার কারণ
মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথার অন্যান্য সম্ভাব্য কারণগুলির মধ্যে রয়েছে:
ঘাড়ের ব্যথা: ঘাড়ের ব্যথা মাথার পিছনে ব্যথার একটি অন্যতম কারণ। ঘাড়ের সমস্যার কারণগুলির মধ্যে রয়েছে তাৎক্ষনিৎক্ষনিক এবং ডিস্কের সমস্যা।
ক্যাফিন বা অ্যালকোহলের ব্যবহার: ক্যাফিন এবং অ্যালকোহল উভয়ই মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া: কিছু ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া , যেমন অ্যান্টিডপ্রেসেন্টস এবং রক্তচাপের ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া, মাথাব্যথার কারণ হতে পারে।
গুরুতর রোগ: মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথা কিছু ক্ষেত্রে, একটি গুরুতর চিকিৎসা অবস্থার লক্ষণ হতে পারে, যেমন:
- মস্তিষ্কের টিউমার
- মস্তিষ্কের রক্তপাত
- মস্তিষ্কের সংক্রমণ
- মস্তিষ্কের ভেরিকোজ শিরা
মাথার পিছনে ডান পাশে ব্যথার কারণ নির্ণয়ের জন্য, ডাক্তার আপনার রোগের ইতিহাস, লক্ষণগুলি এবং শারীরিক পরীক্ষার উপর ভিত্তি করে রোগ নির্ণয় করবেন ও সঠিক চিকিৎসার পরামর্শ দিতে পারবেন।
মাথা ভারী লাগার কারণ
মাথা ভারী লাগার বেশ কয়েকটি কারণ রয়েছে। এর মধ্যে সবচেয়ে সাধারণ কারণ হল:
- পানিশূন্যতা
- অতিরিক্ত ঘুম বা ঘুমের অভাব
- অতিরিক্ত স্ট্রেস
- খাদ্যাভ্যাস
- ঔষধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া
মাথা ব্যাথা বমি বমি ভাব এর ঔষধ
মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের জন্য অনেকগুলি ওষুধ পাওয়া যায়। কিছু সাধারণ ওষুধের মধ্যে রয়েছে:
অ্যাসিটামিনোফেন (টিলিনোল, টাইলেনোল): এটি সাধারণ ব্যথানাশক এবং জ্বরনাশক ওষুধ যা মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ইবুপ্রোফেন (অ্যাডভিল, মোট্রিন): এটি আরেকটি সাধারণ ব্যথানাশক যা মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
ন্যাপ্রোক্সেন (অ্যালভা, ন্যাপ্রোক্সেন): এটি আরেকটি সাধারণ ব্যথানাশক যা মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
অ্যাসপিরিন (অ্যাসপিরিন): এটি একটি ব্যথানাশক এবং জ্বরনাশক যা মাথাব্যথা এবং বমি বমি ভাবের জন্য কার্যকরী ভূমিকা পালন করে।
এসকল ওষুধ সেবনের পূর্বে অবশ্যই একজন ডাক্তারের পরামর্শ নিতে হবে।
সাধারণ জিজ্ঞাসাঃ
মাথা ব্যাথা ও বমি ভাব কিসের লক্ষণ ?
টিউমার, মস্তিষ্কের রক্তক্ষরণ,স্ট্রোক, মেনিনজাইটিস, ইন্ট্রাক্রেনিয়াল হাইপারটেনশন, রক্তচাপের সমস্যা, হৃদরোগ, ডায়াবেটিস, থাইরয়েড সমস্যা, খাদ্যাভ্যাসজনিত সমস্যা, ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া থেকে মাথা ব্যাথা ও বমি ভাব হয় ।
মাথা ব্যাথা বমি ভাব কমানোর উপায় কি?
মাথা ব্যাথা বমি ভাব কমানোর উপায় হলঃঠান্ডা স্যাঁক দেয়া ,পর্যাপ্ত ঘুমান ,পানি এবং অন্যান্য তরল পান করুন,অতিরিক্ত আলো বা শব্দ এড়িয়ে চলুন।
Consultant Physiotherapist
BPT (DU), MPT (Ortho)
PGC in Acupuncture (India)
Specially Trained in Ozone Therapy