গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা না জানলে কি হয়? সামনে কুরবানির ঈদ গরু, খাসি, উট, মহিষ, ভেড়া কত কিছু কুরবানি করবে মানুষ। আর গরুর গোশত ও কলিজা মানুষ মজা করে খাবে। গরুর কলিজায় প্রচুর ভিটামিন রয়েছে। যেগুলো দেহ ও হাড় গঠনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

চলুন আজকে গরুর কলিজা খাওয়ার ১২ টি উপকারিতা সম্পর্কে  জেনে নেই।

১। হাড় ও দাঁত গঠনে কলিজা:

গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে২ পাওয়া যায়। আর এই ভিটামিন কে২ দাতের গুরত্বপূর্ণ উপাদান ডেন্টিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা পালন করে।এছাড়াও ভিটামিন কে২ হাড় গঠনের অন্যতম উপাদান ক্যালসিয়ামকে হাড়ের সাথে সংযুক্ত করতে সহায়তা করে। যার ফলে হাড় অত্যন্ত শক্তিশালী হয়ে থাকে।

২। হার্টের উন্নতিতে গরুর কলিজা:

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা এর মধ্যে অন্যতম হলো হার্টের বিভিন্ন সমস্যা বিশেষ করে হার্ট অ্যাটাক, হার্টে রক্ত জমাট বাধা প্রভৃতি সমস্যা থেকে সুরক্ষা দেয়। কারণ গরুর কলিজাতে ভিটামিন বি-১২ , জিংক, ভিটামিন কে-২ পাওয়া যায় । যেগুলো হার্টের এই সমস্যা থেকে রক্ষা করে থাকে।

৩। ক্যান্সার প্রতিরোধে গরুর কলিজা:

বিভিন্ন গবেষণা থেকে এটা প্রমাণিত হয়েছে যে, ক্যান্সার প্রতিরোধে গরুর কলিজা বিশেষ ভূমিকা পালন করে। যে সকল মানুষের দেহে  ভিটামিন কে-২ পর্যাপ্ত পরিমাণে থাকবে তার ক্যান্সার হওয়ার সম্ভাবনা অন্য মানুষের তুলনায় ৬৩ ভাগ কম হবে। আর আমরা জানি গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন কে-২ পাওয়া যায়।

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা
গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা

৪। পাকস্থলি ও পরিপাকে গরুর কলিজা:

আমরা বিভিন্ন ধরনের খাবার খাই যেগুলো আমাদের পাকস্থলি , ক্ষুদ্রান্তে,বৃহদন্ত্রে গিয়ে পরিপাক হয়। তারপর সেগুলো রক্তের মাধ্যমে দেহের বিভিন্ন অংশে যেয়ে থাকে। অনেক সময় খাদ্য পরিপাক হতে গিয়ে বিভিন্ন ধরনের বিষাক্ত পদার্থ উৎপন্ন হয়ে থাকে। যেগুলো আমাদের দেহের মারাত্মক ক্ষতি করতে পারে। কিন্তু গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমানে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। এর এই ভিটামিন দেহে উৎপন্ন বিষাক্ত পদার্থ যাতে আমাদের রক্তে মিশতে না পারে তার জন্য বাধা প্রদান করে থাকে।

৫। গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতায় সেলেনিয়াম:

গরুর কলিজায় পাওয়া যায় একটি গুরত্বপূর্ণ রাসায়নিক উপাদান তা হলো সেলেনিয়াম। আর এই সেলেনিয়াম হাড়ের ব্যথা, শ্বাসকষ্ট ও ক্লোন ক্যান্সার প্রভৃতি থেকে রক্ষা করে থাকে। এছাড়াও বয়স কমাতে সেলেনিয়াম বিশেষ ভূমিকা পালন করে।

৬। রক্ত তৈরিতে গরুর কলিজা:

গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে আয়রন পাওয়া যায়। আর এই আয়রন রক্ত তৈরিতে ও পরিবহনে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। বিশেষ করে লোহিত রক্তকণিকা , শ্বেত রক্তকণিকা, অণুচক্রিকা তৈরি থাকে। তাই রক্তশূণ্যতা থেকে বাঁচতে কলিজা খাওয়া উচিত।

৭। চোখের স্বাস্থ্যে কলিজা:

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে অন্যতম উপকারিতা হলো, চোখের উন্নতিতে ও  ভালো রাখতে কলিজা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ পাওয়া যায়। যা চোখকে অন্ধত্ব, প্রদাহ ও ক্ষতি থেকে রক্ষা করে। তাই চোখকে সুস্থ রাখতে গরুর কলিজা অন্যতম সহায়ক হতে পারে।

৮। এনজাইম তৈরিতে ভূমিকা:

আমাদের দেহে প্রতিনিয়ত অনেক ক্রিয়া-বিক্রিয়া সংগঠিত হয়। এসব বিক্রিয়া সংগঠিত হতে হলে এনজাইমের প্রয়োজন হয়। আমাদের দেহের প্রত্যেকটি অঙ্গের জন্য আলাদা আলাদা এনজাইম আছে। তার মধ্যে বিশেষ একটি এনজাইম হলো সাইটোক্রোম P450। যা হরমোন তৈরি ও দেহ থেকে বিষাক্ত পদার্থ দূর করতে সহায়তা করে। আর এ সকল এনজাইম তৈরি করতে  গরুর কলিজা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

৯। গর্ভাবস্থায় গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা:

একজন মা যখন বাচ্চা পেটে ধারন করে, সন্তান জন্মদান করে অথবা বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায় তখন রক্তশূণ্যতায় ভুগার সম্ভাবনা অনেক বেশি। তাই রক্তশূণ্যতা থেকে বাঁচতে গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম।

১০। মানসিক স্বাস্থ্যে গরুর কলিজা:

মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতা অপরিসীম। কারণ গরুর কলিজাতে প্রচুর ভিটামিন বি-১২ পাওয়া যায়। আর ভিটামিন বি-১২ মানসিক স্বাস্থ্য উন্নতিতে অ্যান্টিডিপ্রেসেন্ট হিসেবে কাজ করে। তাই নিজেকে হতাশামুক্ত, দুশ্চিন্তামুক্ত রাখতে গরুর কলিজা খাওয়া যেতে পারে।

১১। ঠান্ডা জ্বরে গরুর কলিজা:

ঠান্ডা, জ্বর, সর্দি, টনসিলাইটিস থেকে রক্ষা পেতে গরুর কলিজা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ গরুর কলিজাতে প্রচুর জিংক রয়েছে। আর জিংক এসকল সমস্যা থেকে আমাদের দেহকে রক্ষা করে থাকে। গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে এটি বিশেষ একটি উপকারিতা।

১২। স্মৃতির জন্য গরুর কলিজা:

গরুর কলিজা খাওয়ার উপকারিতার মধ্যে বিশেষ একটি উপকারিতা হলো স্মৃতি রক্ষার্থে গরুর কলিজা গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কারণ গরুর কলিজাতে প্রচুর পরিমানে  সেলেনিয়াম, কপার, নিয়াসিন, কোলিন, আয়রন প্রভৃতি থাকে। যা স্মৃতির উন্নতীতে গুরত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

ধন্যবাদ

ডাঃ সাইফুল ইসলাম, পিটি

বিপিটি ( ঢাবি ) ,

এমপিটি ( অর্থোপেডিকস  ) – এন.আই.পি.এস , ইন্ডিয়া

পিজি.সি. ইন আকুপাংচার , ইন্ডিয়া

স্পেশাল ট্রেইন্ড ইন ওজন থেরাপি ,  ইউ.এস.এ এবং ওজোন ফোরাম , ইন্ডিয়া ।

ফিজিওথেরাপি কনসালট্যান্ট ,  ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার ।

পরামর্শ পেতে  – ০১৭১০-৮৫০৫৬৩ , ০১৯৩২৭৯৭২২৯

এপয়েন্টম্যান্ট নিতে ক্লিক করুন 

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top