আমাদের কোমরে কোন ব্যথা হলেই আমরা চিন্তায় পরে যাই , এটা কি কিডনি ব্যথা নাকি কোমর ব্যথা অন্য কোন সমস্যা । সাধারনত আমাদের শরীরের ডান পাশে , বাম পাশে বুকের পাজর এবং কোমরের হাড়েরর মাঝখানে কিডনি থাকে । তাই এই জায়গায় ব্যথা হলে ধরে নিতে পারেন কিডনি সমস্যা । কিডনি সমস্যা সন্দেহ হলে আপনার নিকটবর্তী চিকিৎসক দেখানো জরুরি । চিকিৎসক যদি আপনাকে কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে রেফার করে , সেইক্ষেত্রে অবশ্যই কিডনি বিশেষজ্ঞের কাছে যাবেন । তবে কিডনি ব্যথার জন্য কোন ব্যথার ওষুধ না খেয়ে আপনি বাসায় কিছু নিয়ম ফলো করতে পারেন । সেই ক্ষেত্রে অবশ্যই উপকার পাবেন ।
কিডনি ব্যথার ঘরোয়া চিকিৎসা
১। প্রচুর পানি খেতে হবে
কিডনি ব্যথা কমানোর সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ন উপায় পর্যাপ্ত পানি খাওয়া । একজন সুস্থ মানুষের প্রতিদিন ২-৩ লিটার পানি খাওয়া উচিত । আপনার যদি কিডনি পাথর থাকে সেইক্ষেত্রে আরো বেশি পানি পান করতে হবে , যাতে প্রস্রাবের সাথে পাথর বের হয়ে যায় । কিডনি পাথর ছোট হলে , বিশেষ করে ৪ মিমি এর কম হলে পাথর প্রস্রাবের সাথে এমনিতেই বের হয়ে যায় । এছাড়া প্রস্রাব কম হলে বা প্রস্রাব থলিতে প্রস্রাব জমা হয়ে থাকলে প্রস্রাবে ইনফেকশন হতে পারে , তাই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে যাতে প্রচুর প্রস্রাব হয় । ভালভাবে প্রস্রাব হলে ইনফেকশন হওয়ার সুযোগ নেই , ফলে সব জীবানু প্রস্রাবের সাথে বের হয়ে যাচ্ছে । এছাড়া চা কফি এবং কোলা এইসব পানীয় কম খেতে হবে ।
২। পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে
কিডনি ব্যথা দূর করার জন্য বিশ্রাম অনেক সময় অনেক উপকারি । বিশেষ করে কিডনি পাথর বা কিডনি ইনজুরি হলে অতিরিক্ত হাঁটাচলা , কাজকর্ম এবং বেশি এক্সারসাইজ করলে ব্লিডিং বাড়তে পারে । তাই ব্যথা হলে রেস্ট নেওয়াই উত্তম । যেইভাবে শুইলে ভাল লাগে কিডনি ব্যথা কম হয় , সেইভাবে শুয়ে থাকতে হবে ।
৩। গরম সেঁক দিতে পারেন
গরম সেঁক ব্যথা কমানোর জন্য অনেক ভাল একটা উপায় । ব্যথার জায়গায় হালকা গরম সেঁক দিতে পারেন । গরম সেঁক দিলে রক্তসঞ্চালন বৃদ্ধি পায় , নার্ভের সেনসেশন কমে । ফলে আরাম অনুভব হয় । তবে গরম সেঁক দেওয়ার সময় সাবধানে দিতে হবে , যাতে পুড়ে না যায় ।
৪। চিকিৎসকের পরামর্শে এন্টিবায়োটিক নিতে হবে
চিকিৎসকের পরামর্শে প্রস্রাবে ইনফেকশনের ক্ষেত্রে এন্টিবায়োটিক নেওয়া যেতে পারে । তবে অবশ্যই শুধু এন্টিবায়োটিকে কাজ হবে না , আপনি অবশ্যই পর্যাপ্ত পানি খেতে হবে এবং বাসায় বেশ কিছু নিয়ম মেনে চলতে হবে । বাসায় ঘরোয়াভাবে প্রস্রাবে ইনফেশন দূর করার উপায়, জন্য ভিডিও দেখতে পারেন ।
৫। ভিটামিন সি কম খেতে হবে
ভিটামিন সি শরীরের জন্য অত্যান্ত প্রয়োজনীয় জিনিস । বিশেষ করে ভিটামিন সি হাড়ের গঠনের জন্য এবং শরীরে ঘা বা ক্ষত শুকানোর খুবই উপকারী । কিন্তু কিডনি ব্যথার ক্ষেত্রে বেশি পরিমান ভিটামিন সি খেলে সমস্যা হতে পারে , কারন অতিরিক্ত ভিটামিন সি খেলে সেটা কিডনিতে অক্সালেটে পরিনত হয় , পরে এই অক্সালেট কিডনি পাথরে পরিনত হয় । তাই কিডনি পাথরের সমস্যা হলে , ভিটামিন সি কম খাওয়াই উত্তম ।
কিডনি ব্যথার সঠিক কারণ বের করতে হবে
১। কিডনি ইনফেকশন সন্দেহ হলে অবশ্যই চিকিৎসক দেখানো উচিত
কিডনি ব্যথার অনেক কারণ থাকতে পারে । তবে ঘন ঘন প্রস্রাব , প্রস্রাব করতে জ্বালাপোড়া বা ব্যথা করা , জ্বর থাকা অতিরিক্ত ব্যথা হলে অবশ্যই চিকিৎসককে দেখানো উচিত কিডনি ইনফেকশন বা পাইলোনেফ্রাইটিস আছে কিনা । থাকলে সঠিক চিকিৎসা নেওয়া দরকার ।
২। কিডনি পাথর সন্দেহ হলে চিকিৎসক দেখানো উচিত
কিডনি পাথরের সাইজ কত, বাসায় পানি খেলে বের হবে কিনা , কিংবা কোন ওষুধ বা অপারেশন লাগবে কিনা বিস্তারিত আলোচনা করা দরকার । যার সাথে এইসব আলোচনা করা যায় তার কাছে যাওয়া উচিত । অযথা কার্ড আর ডিগ্রি দেখে যাওয়া উচিত না ।
৩। কিডনি ব্যথা না হয়ে কোমর ব্যথা হলে
অধিকাংশ ক্ষেত্রেই কোমর ব্যথা হয়ে থাকে , আমরা অযথা টেনশন করি কিডনি ব্যথা কিনা । বিশেষ করে কোমর পিছন দিকে ব্যথা বা পায়ের দিকে বা বাটকে ব্যথা কোমর ব্যথা । সেই ক্ষেত্রে ফিজিওথেরাপিস্ট দেখিয়ে কোমর ব্যথার চিকিৎসা করা অত্যাবশ্যকোয়
৩। কিডনিতে কোন আঘাত পেলে বা কোন ওষুধের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে কোন সমস্যা হলে , বিশেষ করে রক্তক্ষরন হলে অবশ্যই জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসক দেখানো উচিত ।
ধন্যবাদ
কনসালট্যান্ট ফিজিওথেরারপিস্ট
বিপিটি , এমপিটি ( অর্থোপেডিক) – ইন্ডিয়া
প্রতিষ্ঠাতা , ভিশন পেইন ক্লিনিক
ভিশন ফিজিওথেরাপি সেন্টার , উত্তরা, ঢাকা ।
এপয়েনম্যান্ট ০১৯৩২৭৯৭২২৯
কোন ওষুধ ছাড়া প্রস্রাবে ইনফেকশন দূর করার উপায়
Consultant Physiotherapist
BPT (DU), MPT (Ortho)
PGC in Acupuncture (India)
Specially Trained in Ozone Therapy
Pingback: ডায়াবেটিস কি ? ডায়াবেটিস কেন হয় ? ডায়াবেটিস কমানোর উপায়